নীলাকাশ বার্তাঃ বিক্ষোভ কারীদের নয়, এবার বাস থেকে নামিয়ে সাধারণ মানুষকে অত্যাচার শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লোকজন। শুক্রবার দেশটির ইয়াঙ্গুনের ওক্কালাপা শহরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, জান্তারা বাস থামিয়ে বলপূর্বক টেনে হিঁচড়ে যাত্রীদের নামিয়ে লাঠি দিয়ে অমানবিক ভাবে আঘাত করেছে এবং প্রবল ভাবে লাথির পর লাথি মেরেছে। এই খবর দিয়েছে ইরাবতী নামে একটি সংবাদ মাধ্যম।
উত্তর ওক্কালাপা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থুধামায় চলতে থাকা ইয়াঙ্গন বাস সার্ভিসের গাড়িগুলোকে সিগন্যাল দিয়ে রাস্তার পাশে থামাতে দেখা গেছে । এরপর সেনা সদস্যরা বাসের ভেতরে ঢুকে যাত্রীদের ধরে ধরে জোর পূর্বক টেনে হিজড়ে নিচে নামায়।
ওদেরকে ‘নিল ডাউন’ করতে বলা হয়, শুরু হয় অত্যাচার। শুধু যাত্রীদের পিটিয়েই ওরা ক্ষান্ত হচ্ছে না, বাসের চালকসহ অন্য কর্মীদেরও তারা এই অত্যাচার নির্যাতন থেকে রেহাই দিচ্ছে না।
এ ঘটনার পর থেকে খবর পেয়ে ওই বাসগুলো গন্তব্যে যেতে অন্য রাস্তা ব্যবহার করতে শুরু করে। চালকদের রুট পরিবর্তনের খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা আবাসিক ওয়ার্ড গুলোতে চিৎকার করতে করতে গুলি চালাতে থাকে।
এ সময় এলাকায় কী ঘটছে, তা দেখতে ঘর থেকে বের হয়েই বিপদে পড়েছেন ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। এদের ধরতেই সেনা সদস্যরা সংশ্লিষ্টদের বাড়ির ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে।
বাসে থাকা আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “সেনারা প্রথমে বাস চালককে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর পুরুষ যাত্রীদের লাথি দিতে থাকে আর বলে- যুদ্ধ কর আমার সঙ্গে। মহিলা যাত্রীদের চুল ধরে টানাটানি করে এবং গালে থাপ্পড় মারতে থাকে।”
“শনিবার পর্যন্ত জান্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ২০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য ইরাবতী। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া অভ্যুত্থান বিরোধী আন্দোলনে এ পর্যন্ত ৫৫৬ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে তারা।”
আরও পড়ুন
লকডাউন শুরু, রয়েছে যেগুলো নিষেধাজ্ঞায়
নীলাকাশ বার্তাঃ বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগ জনক হারে বাড়তে থাকায় লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন, এই লক ডাউন চলমান থাকবে আগামী সাত দিন। এই সোমবার থেকে আগামী সোমবার।
“প্রথম দফায় আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত থাকবে এই লক ডাউন। বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।”
লক ডাউন ঘোষণা ও এই সময়ে পালনের জন্য ১১টি বিধি- নিষেধের কথা জানিয়ে রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক কার্যানবলি/ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ’ শিরোনামের জারি করা আদেশে বলা হয়- করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক ২৯ মার্চ তারিখের ১৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই স্মারকের ধারাবাহিকতায় ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতিপালনের জন্য নিুলিখিত ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এগুলো হচ্ছে-
সব প্রকার গণপরিবহণ (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহণ, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন বন্দরের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।
সব সরকারি/ আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে।
শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
খাবারের দোকান ও হোটেল- রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।
শপিং মলসহ অন্যান্য সব দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানগুলো পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা সশরীরে যেতে পারবে না।
কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সারা দেশে জেলা ও মাঠপ্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।
এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ নির্দেশনার কপি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিবকে এ নির্দেশনা পাঠিয়ে তা অধীন দপ্তর/সংস্থাগুলোকে বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
DEVELOPED BY - ANOWARULBD.ME
Leave a Reply