অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় – সম্পাদকীয় কলাম
ভারতের একটি জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দ বাজার এই পত্রিকায় অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় একজন কলামিস্ট তার লেখাতে অনেক সুন্দর একটি দিক ফুটে উঠেছে। অনেকেই আবার বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির বিষয়ে কথা তুলেছেন তবে তার লেখায় ধর্মের মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন। তার লেখাটি নীলাকাশ বার্তা এর পাঠকের জন্যে হুবহু তুলে ধরা হলো।
“শেষ ফাল্গুনের বেলায় অনেক ক্ষণ পথ চলতে চলতে ছেলেটির তেষ্টা পেয়েছিল। বয়েস তার বছর চোদ্দো, কিংবা আরও কম। রাস্তার ধারে বড়সড় মন্দির, জল খেতে সেখানে ঢোকে সে। ঢোকার অপরাধে বেধড়ক মার খায় সে। তার অপরাধ, সে ধর্মে মুসলমান। মন্দিরের দরজায় পরিষ্কার লেখা আছে, সেখানে মুসলমানের প্রবেশ নিষেধ।”
“উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদের এই সাম্প্রতিক ঘটনাটি নিয়ে কিছুটা শোরগোল হয়েছে। দুই’এক পশলা তদন্ত, গ্রেফতারি ইত্যাদিও। তার পর, যথারীতি, সংবাদ অচিরেই ইতিহাসে পরিণত। সে-দিন সমাজ মাধ্যমে ইতস্তত ভেসে বেড়াতে বেড়াতে নজরে এল মিনিট সাত- আটের একটি সংবাদ-ভিডিও মারধরের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মন্দিরের কর্তারা সেখানে সাফ সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের জায়গায় ‘ওরা’ ঢুকবে না, ব্যস। তাঁদের উচ্চারণে ‘ওদের’ সম্পর্কে যে মনো ভাব ধরা পড়ে, তা আজ আর আমাদের বিন্দুমাত্র বিস্মিত করে না। বরং আমরা বিলক্ষণ বুঝে গেছি, এটাই এখন বহু মানুষের মত। কেবল যোগী আদিত্যনাথের আপন দেশে নয়, আমাদের এই সোনার বাংলাতেও।
কিন্তু এ-গল্প সেখানেই ফুরোয় না। সংবাদ চিত্র এগিয়ে চলে, ক্যামেরার সামনে আসেন মার -খাওয়া কিশোরের স্বজনরাও। তার দিনমজুর বাবা খুব নিচু গলায় বলেন, ছেলে লেখাপড়া জানে না, জানলে মন্দিরের সামনে যে নোটিস লেখা আছে, সেটা পড়ে নিতে পারত, তা হলে আর ভিতরে ঢুকত না (ছেলেটি অবশ্য বলেছে যে, খুব তেষ্টা পেয়েছিল, বোর্ডে কী লেখা আছে খেয়াল করেনি), কিন্তু সে যা-ই হোক, না বুঝে ঢুকে পড়েছে না হয়, তাই বলে ও রকম মারতে হয়? বার করে দিলেই পারত। মুখেচোখে এক রাশ ভয়, ভাঙা শরীর, রোগা, রুগ্ন মানুষটির অসহায় কথাগুলো শুনতে শুনতে খুব অস্থির লাগে। একটা ছোট ছেলে ‘মন্দিরে জল খেতে গিয়েছিলাম’ বলার সঙ্গে সঙ্গে কিছু লোক তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রহার করছে, এ-দৃশ্য নিশ্চয়ই হিংস্র।
ধর্মের ইজারা নিয়ে ক্ষমতার আসনে বসে থাকা লোকজন যখন সেই ঘটনা উপলক্ষে ‘ওদের’ প্রতি নির্মম বাক্যগুলো ছুড়ে দিতে থাকে, তার হিংস্রতা নিশ্চয়ই আরও ভয়ঙ্কর। কিন্তু ছেলে জল খাওয়ার অপরাধে মার খেয়ে এসেছে, এই অমানবিকতার প্রতিবাদে ক্রোধ বা এমনকি ক্ষোভ টুকুও প্রকাশ না করে বাবা যখন ‘পড়তে জানে না, তাই ভুল করে ঢুকে পড়েছে’ বলে কার্যত মার্জনা ভিক্ষা করেন, তখন তাঁর ভীত সন্ত্রস্ত আচরণে যে অতলান্ত অসহায়তা প্রকট হয়ে ওঠে, তা সমস্ত হিংস্রতার থেকে বেশি ভয়ঙ্কর।
আক্ষরিক অর্থেই ভয়ঙ্কর, কারণ তা দেখে ভয় করে- হাড় হিম করা ভয়। ভয়ের দাপট তো তখনই নিরঙ্কুশ হয়ে ওঠে, যখন আর বাইরে থেকে ভয় দেখাতে হয় না, মানুষ নিজেই ভয় পেয়ে গুটিয়ে থাকে, গুটিয়ে থাকাই তার স্বভাবে- স্ব-ভাবে- পরিণত হয়। দেশ জুড়ে এই ‘স্বাভাবিক ভয়’ সঞ্চারিত করে চলারই উৎকট অভিযান দেখছি আমরা, যারাই সাহসের সঙ্গে ক্ষমতার বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়, ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে চায়, তাদেরই ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য বেপরোয়া উদ্যমে সমস্ত রকমের ছল, বল ও কৌশলের প্রয়োগ জারি আছে। “সে-চেষ্টা এখনও ষোলো আনা সফল নয়, এখনও প্রতিবাদ সরব হচ্ছে, প্রতিরোধ সক্রিয়।
“কিন্তু অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, নানা পরিসরে ভয়ের বিষ ক্রমাগত নিজের কাজ করে চলছে, যে বিষ মানুষের স্বাধীন স্বক্ষম চিন্তাকে ক্রমে নিস্তেজ ও নিষ্ক্রিয় করে দেয়, আত্মরক্ষার তাড়নায় সে চুপ করে যায়, থেমে যায়, গুটিয়ে যায়। “এই ভাবে শেষ পর্যন্ত আত্মরক্ষাও করা যায় না, ইতিহাস বার বার তা প্রমাণ করেছে, কিন্তু তাতে ওই তাড়নাটা মিথ্যে হয়ে যায় না।”
” সংখ্যালঘু মানুষ, বিশেষত সংখ্যালঘু মুসলমান মানুষ আজ যে মাত্রায় এই দেশে ভয়ের শিকার, সেটা বোধ করি অন্য কারও সঙ্গেই তুলনীয় নয়। এই সত্য বোঝার জন্য খুব বেশি মানসিক পরিশ্রমের প্রয়োজন নেই, কেবল মনে মনে, এবং আন্তরিক ভাবে, নিজেকে এক বার তাঁদের জায়গায় রেখে ভাবলেই যে শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়, এটা হলফ করে বলতে পারি”। গাজ়িয়াবাদের ওই অসহায় শ্রমিক- পিতার মিনতি শুনে তাই এক গভীর আতঙ্ক বোধ করেছিলাম।”
“সাহস দিলেন তাঁর পাশে থাকা মেয়েরা। কেউ পরিবারের, কেউ বা প্রতিবেশী। সংবাদ মাধ্যমের সামনে বাবার মুখে ‘অনপঢ়’ ছেলের ভুল করে মন্দিরে ঢোকার কথা শুনতে শুনতে ওঁরা অচিরেই অস্থির হয়ে পড়লেন এবং তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন: ‘‘বাচ্চা কোনও ভুল করেনি। জল তেষ্টা পেয়েছে, জল খাবে না? মন্দির হোক, মসজিদ হোক, কী এসে গেল?’’ এক জন মুখ খুলতে না খুলতেই সরব হলেন অন্য মেয়েরাও।” কোনও সংশয় নেই তাঁদের কণ্ঠস্বরে, এক ফোঁটা ভয় নেই, সমস্বরে বললেন তাঁরা, জল খেয়েছে বলে ছোট ছেলেটাকে অমন করে মারবে? এ কেমন আচার-আচরণ?
গরিব ঘরের ওই সাধারণ মেয়েদের তীব্র এবং স্পষ্ট উচ্চারণ শুনে মনে হয়, এই জোরটাই আমাদের এখন খুব দরকার। দেশ জুড়ে বিদ্বেষ দিয়ে মানুষকে ভাগ করার যে তৎপরতা, এই মুহূর্তে নির্বাচনী পশ্চিমবঙ্গে যা এক উৎকট রূপ ধারণ করেছে, তার মোকাবিলায় ওই নির্ভীক প্রত্যয়ের কোনও বিকল্প থাকতে পারে না।
যারা বিভেদ এবং বিদ্বেষকেই তাদের মূলধন করে ক্ষমতার কারবার চালাতে চায়, প্রথম কাজ হল তাদের খেলাটাকেই অস্বীকার করা। তাদের মুখের উপর বলে দেওয়া-কিসের মন্দির? কিসের ধর্ম? কিসের জাতপাত? লোকের জল তেষ্টা পেলে যেখানে জল আছে সেখানে জল খাবে। এটাই মনুষ্যত্ব, ব্যস।
“এ কোনও শেখানো তত্ত্বের বুলি নয়, আন্তরিক বিশ্বাসের কথা। ওই মেয়েদের সে-বিশ্বাস আছে, তাই তাঁরা ওই ভাবে কথাটা বলতে পেরেছেন। আমরা অনেকেই হয়তো এই বুনিয়াদি বিশ্বাসের জোরটা হারিয়েছি, তাই নানা যুক্তির জাল বুনি, রকমারি তত্ত্ব খাড়া করি, কিন্তু ধর্মের নামে যারা চূড়ান্ত অধর্মের কারবার চালায় তাদের প্রথমেই সপাটে প্রত্যাখ্যান করে শুনিয়ে দিতে পারি না: আগে ইনসানিয়াৎ-এর শর্ত মানো, না হলে- নো পাসারান।
কেউ কেউ সেই দরকারি কাজটা করছেন। নির্বাচনী পশ্চিমবঙ্গের এই অদ্ভুত আঁধারেও তৈরি হচ্ছে কিছু কিছু ব্যতিক্রমী মুহূর্ত, যে মুহূর্তগুলি ভরসা দেয়, সাহস দেয়। যেমন ভরসা দিচ্ছেন ভোটের লড়াইয়ে নামা এক ঝাঁক তরুণতরুণী। তাঁরা কে কেমন ফল করবেন, কত ভোট পাবেন, সেটা মে মাসের দু’তারিখে জানা যাবে।
কিন্তু আপাতত ভরসা দিচ্ছে তাঁদের সাফ কথা, চোখে চোখ রেখে সে-কথা বলার দৃপ্ত ভঙ্গি। যেমন তাঁদেরই এক জন, কলকাতার উপকণ্ঠে প্রার্থী হয়েছেন, সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোট এ বার ভাগ হবে কি না, হলে তার ফল কী হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। মেয়েটি শান্ত হয়ে পুরো প্রশ্নটা শুনলেন এবং জবাব দিলেন: দেখুন, যে সঙ্কটের মধ্যে আমরা রয়েছি, তার তো কোনও হিন্দু-মুসলমান ভাগ হয় না। ‘যখন একটা মানুষের খিদে পায়, সেই খিদে তো আর হিন্দু খিদে মুসলমান খিদে আলাদা করে হয় না!’
হয় না, তা আমরা জানি। জেনেও ভুলে যাই। ভুলিয়ে দেওয়া হয়। মনে রাখা আমাদের কাজ। দায়িত্ব। দায়। সেই দায় মেটাতে পারলেই ভয়ও কাটবে। সাহস ক্রমে আসবে। আসছে।
আরও পড়ুন
সরকার বিরোধী বিক্ষোভ, গুলিতে এক দিনেই নিহত ৫০
নীলাকাশ বার্তাঃ “মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এমন এক সময় দেশটিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যখন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জনগণ ও গণতন্ত্রের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আজ শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সেনাপ্রধান বলেছেন, “গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়”। “যে দাবিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়।”
“তবে কবে নাগাদ তিনি এই নির্বাচনের আয়োজন করবেন; তা নিশ্চিত করে বলেননি।”
তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির বে-আইনী কার্যকলাপের কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।”
“এর আগে বিক্ষোভ নিয়ে রাস্তায় নেমে আসলে পিঠে ও মাথায় গুলি করে হত্যার হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন থেকে।”
শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী “ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়াসহ বিভিন্ন শহরে আটকদের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।”
জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী বিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাসা বলেন, আজকের দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক।” তিন শতাধিক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন জেনারেলরা।” নিহতরা সবাই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের বিক্ষোভের অংশ নিয়েছিলো।
আরও পড়ুন
শ্যামনগরে মন্দিরে পূজা দিলেন মোদি
নীলাকাশ বার্তাঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি পূজায় অংশ গ্রহণ করেন। এর আগে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টার ঈশ্বরীপুরের হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেখান থেকে তিনি কালীমন্দিরে পৌছান।
যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পুরোহিত দিলীপ মুখার্জি বলেন, “কালীমন্দিরে পূজা শেষে তিনি টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।”
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনে সাতক্ষীরায় ঈশ্বরীপুরে বিভিন্ন পর্যায়ে ১ হাজার ৩০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।” এ ছাড়া সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন আরও ২০০ পুলিশ সদস্য। “বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।”
“নরেন্দ্র মোদি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরটিতে পূজা শেষে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে । গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে। বেলা ১১টার কিছু আগে নরেন্দ্র মোদি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে গিয়ে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
আরও পড়ুন
শুভেচ্ছা বার্তায় বাইডেন, উন্নয়নের উদাহরণ এখন বাংলাদেশ
নীলাকাশ বার্তাঃ “স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন বিশ্ব মোড়লেরা।
” বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের নজির। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস”।
‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম,- বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মুজিব চিরন্তন উৎসবের সমাপনীতে আজ শুক্রবার তাঁদের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়েছে।
“একই দিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শুভেচ্ছা বার্তাও প্রচার করা হয়।”
শুভেচ্ছা বার্তায় জো বাইডেন জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক নজির হয়ে উঠেছে। মানবিকতা ও উদারতার উদাহরণ তৈরি করেছে দেশটি”। লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকারের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে”। বিশ্বের অন্যান্য দেশের জনগণের জন্য বাংলাদেশ একটি উদাহরণ।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুকে একজন অসাধারণ রাজনৈতিক নেতা অভিহিত করেছেন। দুই দেশের বন্ধুত্বের ঐতিহাসিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দ্বিপক্ষীয় গঠন মূলক এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী তিনি।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত অগ্রসর হওয়ার দিকটি তুলে ধরে দুই দেশের এক সঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন
হেফাজতের বিক্ষোভ ও হরতালের ডাক
নীলাকাশ বার্তাঃ “দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ও রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এক ভিডিও বার্তায় হেফজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ ঘোষণা দিয়েছেন।
“এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন ‘হরতালে কাউকে নৈরাজ্য করতে দেয়া হবেনা।”
উল্লেখ্য, “চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এবং চট্টগ্রামে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন।”
আরও পড়ুন
অন্ধ প্রেমের পাঁচ বছর
মোঃ নুরুজ্জামান, লেখক, সম্পাদক নীলাকাশ বার্তা
যারা লেখক বা গল্পকার তারাই বলতে পারে কোন গল্প সত্যি আর কোন গল্পটা কল্পনায় লেখা। তবে আমি যে গল্পটি লেখবো সেটা বাস্তব সত্যি ঘটনা অবলম্বনে। তবে গল্পের নায়ক বা নায়িকার নাম ভিন্ন আকারে প্রকাশ করা হবে। এর কারন বাস্তব জীবনের গল্প আর কল্পনার গল্প এক হতে পারে না বা হয়ও না। তাই লেখকের নাম প্রকাশ হলেও গল্পের নায়ক নায়িকার আসল নামের পরিবর্তে ছদ্মনাম ব্যবহার করা হচ্ছে।
দিনটি এখান থেকে পাঁচ বছর আগের ২০১৬ সালের ২৬ শে মার্চ। সেই দিনে মন খারাপ করে বসে আছে সাগর। সাগর একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সে একটি টল দোকানের চৌকিতে বসে দুনিয়া নিয়ে ভাবছে। তার ব্যবসার হাল খুব ভালো না৷ সে যে পরিমান আয় করে, তাতে কোন রকমে চলে তার। জীবনে স্কুলে যায়নি। তবে যথেষ্ট পরিমাণ বোঝে বা আত্মবিশ্বাস বেশি।
সব কিছুই এক বারেই বিশ্বাস করে। কথা প্রসঙ্গে একজন তাকে বলেছে, বড় লোকের মেয়ের সাথে প্রেম করলে জীবনে উন্নতি হবে। তবে বড়লোকের মেয়ের সাথে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার মত সাহস তার নেয়। কারণ সাগর একটু লাজুক স্বভাবের। এরপরও লেখা পড়া জানে না। গায়ের রং কালো। দেখতে খুব বেশি ভালো না। সে কারণেই এর আগে তার কোন মেয়ের সাথে সেভাবে কথা বলা হয়ে উঠেনি। হটাৎ কি মনে করে একটি অচেনা মোবাইল নাম্বারে ফোন দেয় ওই দোকানে বসে। কিন্তু ফোনটি কেউ রিসিভ করেনি।
ওই দিন সন্ধ্যায় সেই নাম্বার থেকে একটি কল আসলো। কেটে কল দেওয়ার সাথে সাথে চমকে উঠলো সাগর। ভেসে আসলো মেয়েলি কন্ঠ। সাগরের মনে ঝড় উঠে গেছে। ফোনে অচেনা মেয়ের সাথে এই প্রথম তার কথা। পরিচয় পর্ব শেষ হলো। কথা চললো কিছু দিন। এরপরে টানা ছয় মাস মেয়েটি তার বাড়ি থেকে লেখাপড়ার উদ্দেশ্য মামার বাসা গেছে। সেখান থেকে ফিরে আসলো বাড়ি। এসেই ফোন দিলো সাগরকে। কিন্তু যখন ওই মেয়ে ফোন দিচ্ছিল তখনই সাগরের মনে আচমকা স্বরণ হয় ওই মেয়ের কথা।
ফোন আসলো ভালোমন্দ কথা হলো। কিছু দিন কথা বলতে বলতেই, না দেখেই মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিলো সাগর। প্রথম দিকে রাজি না থাকলেও একটা সময় ছেলেটার প্রতি না দিখেই দূর্বল হয়ে যায় মেয়েটি।
একটু জানিয়ে রাখি মেয়েটির নাম নদী বাড়ি উত্তরাঞ্চল এলাকায় ছেলেটির বাড়ি দক্ষিণাঞ্চলে এলাকায়। মেয়েটি ধনি পরিবারের একমাত্র মেয়ে। যখন মেয়েটির সাথে সাগরের কথা হয় তখন সে ওই দিনেই এসএসসি পরীক্ষায় শেষ দিন। বর্তমানে মেয়েটি একজন সরকারি অফিসের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা। ছেলেটি ক্ষুদ্র ব্যবাসায়ি। এখনো ব্যবসা করে যাচ্ছে।
এবার আসল ঘটনায় আসি, ছেলেটি মেয়েকে বার বার নেটের মাধ্যমে দেখতে চাই। মেয়েটি বার বার তারিখ পরিবর্তন করে। যখন সম্পর্কের চার বছর তিন মাস তখন মেয়েটি নতুন টাস ফোন কিনে ইমুতে কথা বলে। প্রথম দেখায় সাগর ও নদী একে অপরের পছন্দ করে। এরপর থেকে ছেলে ও মেয়ের পরিবার পর্যন্ত গড়াই বিষয়টি। ছেলের সাথে মেয়ের মায়ের কথা হচ্ছে। মেয়ের মায়ের সঙ্গে ছেলের মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এভাবেই চলছে দীর্ঘদিন। এখন সাগর নদীকে বলছে তার সাথে মিশে যেতে। প্রেমের পরে বিয়ে করে সাগর ও নদীর একে অপরের সাথে মিশে যেতে চাই।
আজ ২৬ শে মার্চ ২০২১ সাল সম্পর্কের পাঁচ বছর এই দিনে নদী ও সাগরে সাথে বিয়ে হওয়ার কথা তবে এই মুর্হুতে বিয়ে হচ্ছে না তাদের। মেয়োটি বিয়ের বিষয়ে আরও দুই মাস সময় নিয়েছে। দেখা যাগ সর্বশেষ কি হয়। এর আগে এই গল্পটি প্রথম পর্ব সূর্যের আলো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এর পর এবার দ্বিতীয় পর্ব। পাঠকরা তাকিয়ে রয়েছে গল্প সর্বশেষ কোন দিকে যায়। গল্পের বাকি অংশ জানতে সঙ্গে থাকবেন আশা করি। গল্পটি লেখকের কল্পনায় লেখা কারো সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ি নয়।
DEVELOPED BY - ANOWARULBD.ME
Leave a Reply