নীলাকাশ বার্তাঃ ” একজন চিকিৎসককে আটকে রেখে জোর করে বিয়ে করা ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে এক কথিত কাজী ও এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে চিকিৎসককে বাসায় ডেকে `সন্ত্রাসী বাহিনী’ দিয়ে জোর করে বিয়ে করেছেন ওই নারী।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত পদ্মা আবাসিক এলাকায়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। পরদিন চন্দ্রিমা থানায় মামলা হলে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এক নারীসহ কাজীকে গ্রেফতার করেছে। এ চক্রের সাথে জড়িত আরও কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
চন্দ্রিমা থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, “পদ্মা আবাসিক এলাকার ৮ নং সড়কের ৪৩২ নং চারতলা বাসার নীচ- তলায় কলেজ শিক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকেন রাজশাহীর বাগমারার পাপিয়া সুলতানা পপি (৩৫)। পপির স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন বলে বাড়ি মালিককে জানিয়ে তিনি ভাড়া নিয়েছিল বছর দেড়েক আগে।”
“এ ভবনের তিন তলায় থাকতেন রাজশাহীর প্রাইভেট বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষানবিস চিকিৎসক মাহবুব হোসেন।” মাহবুবের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডিমলায়।” একই ভবনে থাকার সুবাদে দুই পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ ছিল”। বাসাটি রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামের।”
সম্প্রতি ডা. মাহবুব এমবিবিএস শেষ করে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাই ওই বাসা ছেড়ে মাহবুব আবাসিকের আরেক বাসায় বন্ধুর সাথে থাকতে শুরু করেন।”
অভিযোগ মতে, “অসুস্থতার কথা বলে ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পাপিয়া সুলতানা পপি ফোন করে মাহবুবকে বাসায় আসতে বলেন”। মাহবুব কিছু ওষুধপত্র নিয়ে পপির বাসায় যান।”
“সেখানে কিছুক্ষণ পর চার জন ‘সন্ত্রাসী’ বাসায় ঢুকে মাহবুবকে বেঁধে ফেলে মারধর করেন ও তার কাছ থেকে একটি কাবিননামা ও কয়েকটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়।” কয়েক ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।”
“এদিকে বৃহস্পতিবার মাহবুবকে ফোন করে পপি ও তার সহযোগীরা জানান, “পপির সাথে তার বিয়ে হয়ে গেছে। কাবিননামা তাদের কাছে আছে”। ছাড়াছাড়ি বা ডিভোর্স করতে চাইলে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে।” মাহবুব এদিন বিকালে চন্দ্রিমা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।”
“মামলা রেকর্ডের পর পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতেই পদ্মা আবাসিকের ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে পপিসহ বিয়ের কথিত কাজীকে গ্রেফতার করেন।” অভিযান কালে বিয়ের কাবিননামাসহ ফাঁকা স্ট্যাম্পও উদ্ধার করেছে পুলিশ”। শুক্রবার বিকালে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়।”
চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মুনীর বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া সুলতানা পপি জানিয়েছেন, একই ভবনে থাকার সুবাদে ডা. মাহবুবের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।” তাকে বিয়ে করার অঙ্গীকারও করেছিলেন।”
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মাহবুব রাজশাহী ছেড়ে ঢাকায় যাবে জানতে পেরে তিনি তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে চাপ দিয়ে বিয়ে করেন। তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়নি।”
তবে এ বিষয়ে ডা. মাহবুবের বক্তব্য জানা যায়নি।” পুলিশ অবশ্য বলছে, এটি একটি প্রতারণার ঘটনা। পপির একটি কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রয়েছে। আর মাহবুবের বয়স ২৬ বছর।”
অন্য দিকে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, “পদ্মা আবাসিক এলাকাটি রাজশাহীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ফলে এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে দেহব্যবসাসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশি ঘটছে।”
“পুলিশ এ কারণে ভাড়াটিয়াদের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠালেও অনেক বাড়ি মালিক তা দিচ্ছেন না। ফলে আবাসিকে ভাড়াটিয়ারা কারা কী পেশায় আছেন তা পুলিশ আগেভাগে জানতে পারেন না”। এ কারণে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটছে।”
আরও পড়ুন
কয়েকটি পিলারের ওপর নির্মিত পুকুরে ধসে পড়া সেই ভবন!
ঢাকা প্রতিনিধিঃ “ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুকুরে ধসে পড়া তিনতলা ভবনটি কয়েকটি পিলারের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ।”
“আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মধ্য চড়াইল এলাকায় ওই ভবনটি পুকুরে পুরোপুরি ধসে পড়ে। “এ সময় ভবনে থাকা সাত বাসিন্দার মধ্যে দুজন বের হতে সক্ষম হন।”
“খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন এবং ভবনে আটকেপড়া বাকি পাঁচ জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করেন”। আহতদের মধ্যে এক জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
ইউএনও অমিত দেবনাথ আরও জানিয়েছেন, “সামান্য কয়েকটা পিলারের ওপর বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল”। যার কারণে এটি ধসে পড়েছে।” ভবনটি পড়ার সময় পাশের দুটি ভবনেও ফাটল দেখা দিয়েছে।” আমরা তাৎক্ষণিক ওই দুটি ভবন থেকে লোক জনকে সরিয়ে নিয়েছি।” “পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানকার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, “জলাশয়ের পাড়ে কয়েকটি পিলারের ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। “ওই জলাশয়ের পাড়ে এ রকম আরও কয়েকটি ভবন রয়েছে। সব ভবনই নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্মিত হয়েছে। “চরম নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে তৈরি এসব ভবনের মধ্যে জানে আলমের মালিকানাধীন তিনতলা বাড়িটি পুকুরের মধ্যে পুরোপুরি ধসে পড়েছে।” ভবনটিতে জানে আলমের পরিবার থাকত।”
কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফারুক আহমেদ গণমাধ্যম কর্মীরা জানিয়েছেন, “খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে”। ভবনের মধ্যে আটকেপড়া পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেছেন, “যথাযথ নিয়ম না মেনে ভবনটি পুকুর পাড়ে তৈরি করা হয়েছিল। নরম মাটি ও পিলারের ওপর থাকায় বাড়িটি পুকুরের মধ্যে হেলে পড়ে।”
DEVELOPED BY - ANOWARULBD.ME
Leave a Reply